• E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০৩ পূর্বাহ্ন

×

অর্ধ শতাব্দীতেও আলোর মুখ দেখেনি খুলনার পর্যটন মোটেল

  • প্রকাশিত সময় : শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪
  • ২৮ পড়েছেন

দেশ প্রতিবেদক :

খুলনা—যশোর সড়কে মুজগুন্নিতে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ১৯৭০ সালেপ্রায় ৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে। পরিকল্পনা করা হয় ওই স্থানে পর্যটন বিষয়ে ট্রেনিং সেন্টার, হোটেল মোটেল স্থাপন করার। কিন্তু ৫৪ বছরেও রাষ্ট্রীয়ভাবে সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। পরবর্তীতে পিপিপি (প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্রজেক্ট) তে চালুর উদ্যোগ নেয়া হয় ২০১২ সালে। এ উপলক্ষ্যে দরপত্রও আহবান করা হয়। কিন্তু আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে মাস ছয়েক আগে পর্যটন কর্পোরেশন ওই প্রক্রিয়া থেকে সরে এসে নিজস্ব অর্থায়নে কিভাবে এর পূর্ণাঙ্গতা দেয়া যায় সে লক্ষ্যে কাজ করছে বলে জানা গেছে।খুলনা—যশোর মহাসড়কের মুজগুন্নির শহিদ শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম রেখে সামনে কিছুদূর এগুলে রাস্তার বামপাশে চোখে পড়বে বিশালাকৃতির সাইনবোর্ড ‘স্বাগতম সুন্দরবন নগরী, মুজগুন্নী, খুলনাথ। এরপর গেট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলে ডানপাশে ছোট একটি ভবন। দুথকক্ষের ভবনে থাকেন মোস্তফা কামাল নামে পাহারাদার। আরও ভেতরে প্রবেশ করলে দেখা যাবে কয়েকটি ঝুপড়ি ঘর। সেখানে লালনপালন করা হচ্ছে গরু, ছাগল, হাঁস—মুরগি। পুকুর রয়েছে বেশ বড় একটি। সেখানে মাছ চাষ করেন আরেক ব্যক্তি। সুন্দরবনের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না ‘সুন্দরবন নগরীতে। যারা বসবাস করেন তারাও পর্যটন কর্পোরেশনের সাথে যুক্ত নন।

বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, ১৯৭০ সালে খুলনায় পর্যটন মোটেল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়। খুলনা—যশোর মহাসড়কের মুজগুন্নিতে তখন মোটেল তৈরির জন্য অধিগ্রহণ করা হয় ৪ দশমিক ৮৪ একর জমি। কিন্তু স্বাধীনতা—পরবর্তীতে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। খুলনা পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এখানে আন্তর্জাতিকমানের পাঁচ তারকা মোটেল ও ট্রেনিং সেন্টারসহ পর্যটন কমপ্লেক্স নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। সমীক্ষার কাজ শেষ করে বুয়েট (বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়)। ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি ২০১২ সালের পর থেকেই দরপত্র আহবান প্রক্রিয়া শুরু করে পর্যটন কর্পোরেশন। সরকারের পক্ষে অর্থায়ন করা সম্ভবপর নয় এ খাতে এমন দাবিতে উদ্যোগ নেয়া হয় পিপিপির (প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্রজেক্ট) মাধ্যমে চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। এজন্য কয়েক দফা দরপত্র আহবান করেও আশানুরূপ সাড়া মেলেনি।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ্জামান বলেন, খুলনায় বিভাগীয় ও জেলা পর্যটন অফিস নেই। ২০১৫ সালে তৎকালীন পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন খুলনা সফরকালে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ ছাড়া খুলনায় ভালো মানের কোনো পাঁচ তারকা হোটেল নেই। যার জন্য পর্যটনকেন্দ্রিক রাজস্ব আদায়ে আমরা অনেক পিছিয়ে।সুন্দরবন নগরী নামের এই প্রতিষ্ঠানটিতে মোঃ গোলাম মোস্তফা নামে এক ব্যক্তি দেখভালের দায়িত্বে রযেছেন। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রায় প্রতিমাসে এখানকার অবস্থা প্রধান কার্যালযে লিখিতভাবে জানিয়ে থাকি। বিশালায়তনের এই সম্পত্তি একার পক্ষে দেখাশুনা করা খুবই কঠিন।পর্যটন কর্পোরেশন খুলনা অঞ্চলের দেখাশুনা করেন বেনাপোলের উপ ব্যবস্থাপক মোঃ আবুল কালাম মোড়ল। তিনি জানালেন, পর্যটন কর্পোরেশন খুলনায় একটি ট্রেনিং সেন্টার কাম মোটেল করার জন্য জমি অধিগ্রহণ করে। এটি বাস্তবায়নের জন্য বিপিসি কাজ করছে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা, ট্রেনিং ও পরিসংখ্যান) সৃজন বিকাশ বড়–য়া বলেন, খুলনার মুজগুন্নিতে আন্তর্জাতিক মানের পাঁচ তারকা মোটেল ও পর্যটন কমপ্লেক্স স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান।

২০১২ সালে খুলনার পর্যটনের এই জমিতে পিপিপিতে হোটেল মোটেল চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই পর্যটন কর্পোরেশন বর্তমানে নিজেরাই এই সম্পত্তিতে ট্রেনিং সেন্টার, আন্তর্জাতিক মানের হোটেল মোটেল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য মাস ছয়েক আগে পিপিপি পদ্ধতি থেকে এটি বিমুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আশাকরি দ্রুত এটি অবমুক্ত হবে। এরপর পর্যটন কর্পোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে সুন্দরবন নগরী বাস্তবায়ন করবে। পর্যটন কর্পোরেশনের ওই জমির চারদিকে বর্তমানে সীমানা প্রাচীর দেয়া হয়েছে। জায়গাটি দেখভাল করার জন্য একটি গার্ডরুম তৈরি করে সেখানে একজন সার্বক্ষণিক গার্ড নিয়োজিত আছে।বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা দেশি—বিদেশি পর্যটকদের বেশির ভাগই সুন্দরবনে যান খুলনা হয়ে। যদিও পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এখন ঢাকা থেকে সরাসরি মোংলায় গিয়ে সুন্দরবনে যান পর্যটকরা। তবে পর্যটকদের জন্য সরকারিভাবে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না থাকা এবং দক্ষ জনবল ও প্রশিক্ষিত ট্যুর গাইডের অভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয় পর্যটকদের। সত্তরের দশকে পর্যটন শিল্পের বিকাশে

খুলনায় পর্যটন মোটেল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়। এ লক্ষ্যে নগরীর খুলনা—যশোর মহাসড়কের মুজগুন্নিতে হুকুমদখল করা হয় ৪ দশমিক ৮৪ একর জমি। এরপর কচ্ছপের গতিতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে লেগে যায় ৪৭ বছর। ২০১৫ সালে তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী খুলনা সফরকালে আশ্বাস দিলেও জমিটির চারপাশে বাউন্ডারি, বিপিসির সাইনবোর্ড এবং দেখভাল করার জন্য গার্ডরুম ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA